বহু বছর ধরেই ইইই বা ত্রিপল
ই বা ইলেক্ট্রিক্যাল এবং ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ।
তড়িৎ প্রকৌশল ছাত্র হিসেবে যখন অনেকের কাছে পরিচয় দিতে যাই, তাদের চোখে ইলেক্ট্রিক্যাল
ইঞ্জিনিয়ারিং বলতে ভেসে ওঠে বৈদ্যুতিক বাতি, ফ্যান, সুইচ ইত্যাদি লাগানো। টিভি, রিমোট,
এসি, ফ্রিজ মেরামত করা। :v
মুলত ইলেক্ট্রিক্যাল এবং ইলেক্ট্রনিক্স
ইঞ্জিনিয়ারিং ২ টি বিষয়ের সমন্বয়। এর একটি ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অপরটি ইলেক্ট্রনিক্স
ইঞ্জিনিয়ারিং। বিষয় ২ টি ওতপ্রোত ভাবে একে অপরের সাথে জড়িত হলেও রয়েছে পার্থক্য। প্রথমেই
বলে রাখা ভাল, ইইই এর বিস্তারিত ক্ষেত্র সম্পর্কে লিখলে অনেক কিছু লিখতে হবে। এখানে
সংক্ষেপে শুধু ইলেক্ট্রিক্যাল এবং ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর পার্থক্য বোঝানোর
চেষ্টা করা হয়েছে।
ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংঃ
ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
বা তড়িৎ প্রকৌশল হল ইঞ্জিনিয়ারিং ফিল্ড বা ক্ষেত্রের সেই শাখা যেখানে সাধারণত বিদ্যুৎ,
ইলেকট্রনিক্স এবং তড়িচ্চুম্বকত্ব নিয়ে গবেষণা এবং প্রয়োগ করা নিয়ে বিশদ পড়াশুনা বা
জ্ঞান লাভ করা হয়। ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং শাখায় বিভিন্ন যান্ত্রিক মাধ্যমে বৈদ্যুতিক
শক্তি প্রেরণ বা পাওয়ার ট্রান্সমিটিং এবং শক্তি সংরক্ষণ বা পাওয়ার স্টোরিং নিয়ে নিত্য
নতুন গবেষণা এবং উন্নতি সাধনের কাজ করা হয়। এখানে বৈদ্যুতিক সংকেত বা সিগন্যাল নিয়েও
কাজ করা হয়। ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজের ক্ষেত্র গুলো হলঃ
·
ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিকস
·
অপটিক্স
·
পাওয়ার
·
আলো বা লাইটিং
·
মোটর, জেনারেটর, মেশিন
·
পাওয়ার ট্রান্সমিটিং ইত্যাদি।
ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংঃ
বিভিন্ন নন-লিনিয়ার এবং একটিভ
বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও ইলেকট্রনিক্স উপাদান এবং ডিভাইসের ইলেকট্রনিক সার্কিট, ডিভাইস
এবং সিস্টেম ডিজাইন যেমন ইলেক্ট্রন টিউব এবং অর্ধপরিবাহী ডিভাইস, বিশেষ করে ট্রানজিস্টর,
ডায়োড এবং ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট ইত্যাদি নিয়ে যে শিক্ষা তা ই হল ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং।
ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর উদাহরণ হলঃ
·
বিভিন্ন পোর্টেবল মিউজিক ডিভাইস
·
ব্রডকাস্টিং সিস্টেম
·
টেলিকমিউনিকেশন ডিভাইস এবং সিস্টেম
·
অ্যানালগ সার্কিট্রি ইত্যাদি।
সহজ ভাবে বলতে গেলে ইলেক্ট্রিক্যাল
এবং ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর মূল পার্থক্য হল –
ইলেক্ট্রিক্যালঃ ইলেকট্রন এর প্রবাহ সম্পর্কে জ্ঞান
লাভ ও প্রয়োগ বা ব্যবহার
ইলেক্ট্রনিক্সঃ চার্জ এর প্রবাহ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ
ও প্রয়োগ বা ব্যবহার।
ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
হাই ভোল্টেজ, কন্ডাক্টর, সেমিকন্ডাক্টর, ইন্সুলেটর সব কিছু নিয়েই। আর ইলেক্ট্রনিক্স
ইঞ্জিনিয়ারিং হল বিশেষ ভাবে লো ভোল্টেজ নিয়ে যেমন সেমিকন্ডাক্টর, আইসি ইত্যাদি নিয়ে।
একারণেই ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং হল ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটি শাখা মাত্র।
আর ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং হল ইলেক্ট্রনিক্স সহ হাই ভোল্টেজ, পাওয়ার, মেশিন অর্থাৎ
সব কিছু মিলিয়েই।
যেমন একটি মোবাইল ফোন যেই
টেকনোলজিতে তৈরি করা হয়, তা হল ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং আর মোবাইল ফোন দিয়ে সিগন্যাল
আদান প্রদানের মাধ্যমে যেই টেকনোলজিতে যোগাযোগ করা হয়, তা হল ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং।
আর দু’ইয়ে মিলে হল ইলেক্ট্রিক্যাল এবং ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বা ইইই।
No comments:
Post a Comment